ব্লগিং করে ৫ উপায়ে টাকা ইনকামের বিস্তারিত আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করবো। ব্লগিং করার জন্য প্রথমে আমাদের প্রয়োজন হবে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট। আপনি যদি নিজের একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম করতে চান, তাহলে ব্লগিং আপনার জন্যই। ব্লগিং করতে কোন প্রকার কোডিং জানা লাগবে না। এবং অল্প খরচেই একটি ব্লগ ওয়েবসাইট প্রস্তুত করে ফেলতে পারবেন। আবার একদম ফ্রি অর্থাৎ টাকা ছাড়াও একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো, ব্লগ ওয়েবসাইট কি? কিভাবে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়? এবং ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে কি কি উপায়ে ইনকাম করা যায় তার বিস্তারিত।
একনজরে সূচিপত্রঃ ব্লগিং করে টাকা আয় করার পদ্ধতি।
- * ব্লগ ওয়েবসাইট কি?
- * ব্লগিং করতে হলে কি কি প্রয়োজন?
- * কিভাবে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়?
- * ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে কেমন খরচ হয়?
- * ফ্রিতে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার সুবিধা অসুবিধা
- * ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে কি কি উপায়ে ইনকাম করা যায়?
- * শেষ কথাঃ ব্লগিং করে টাকা ইনকাম
ব্লগ ওয়েবসাইট কি? ব্লগিং করে টাকা আয়
আপনি যদি লিখতে ভালোবাসেন তাহলে আপনি ব্লগিং করে টাকা আয় করতে পারবেন। ব্লগ ওয়েবসাইট হচ্ছে যেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পোস্ট লেখালেখি করবেন। যেমন ওয়ার্কআপ ডিলের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক পোস্ট বা আর্টিকেল লেখা হয়। আর এটিই হচ্ছে ব্লগ ওয়েবসাইট। যেখানে আর্টিকেল বা পোস্ট লেখার পাশাপাশি সেখান থেকে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়।
ব্লগিং করতে হলে কি কি প্রয়োজন?
আপনি যদি ব্লগিং করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনার ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে এবং একটি কম্পিউটার অথবা স্মার্ট মোবাইল দরকার হবে। এছাড়া অবশ্যই আপনার একটি ব্লগ ওয়েবসাইটের দরকার হবে। যেখানে আপনি আর্টিকেল বা লেখা প্রকাশ করবেন। তবে বর্তমানে গুগলের একটি ফ্রি পরিষেবা অর্থাৎ ব্লগার দিয়ে সম্পুর্ন ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করা সম্ভব। এছাড়া আপনাকে এসইও সম্পর্কে অনেক ভালো ধারনা থাকতে হবে ব্লগিং এ সফলতা পাওয়ার জন্য।
কিভাবে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়?
ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনার বেশকিছু বিষয় জেনে বুঝে তারপর ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে৷ না হলে সেখান থেকে ভালো পরিমাণ আয় করতে পারবেন না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের সাথে থাকুন। এই চ্যানেলে নিয়মিত ব্লগিং এর বিষয়ে ভিডিও আপলোড করা হয়।
ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে কেমন খরচ হয়?
আপনি যদি Blogger এর মাধ্যমে প্রফেশনাল ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি ডোমেইন নেম কিনতে হবে। বর্তমানে যদি (.Com) ডোমেইন ক্রয় করেন তাহলে আপনার ৳১,০০০/- থেকে ৳১,৫০০/- টাকা লাগতে পারে। আর ব্লগারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কোন ধরনের হোস্টিং লাগবেনা। সুতরাং আপনার হোস্টিং কিনার টাকা বেচে গেলো। আর যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে প্রফেশনাল ব্লগ ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং দুটোই কিনতে হবে। ১জিবি ভালো হোস্টিং এর দাম ৳১,৫০০/- সাথে যদি পেইড থিম কিনেন তাহলে আরো খরচ বেড়ে যাবে আরো পড়ুন..
ফ্রিতে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার সুবিধা অসুবিধা
ব্লগারের মাধ্যমে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে সেখানে বেশকিছু সুবিধা এবং অসুবিধা আছে যেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। তবে একটা বিষয় জানিয়ে রাখি, আপনার যদি শুধু ব্লগিং বা আর্টিকেল লিখে আয় করার ইচ্ছে থাকে তাহলে আপনি ব্লগার নির্বচন করতে পারেন। আর যদি এই সাইটে অনেক ফাংশন যুক্ত করতে চান, ই-কমার্স সিষ্টেম করতে চান তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস সেরা হবে। কারন ব্লগারটা তৈরি করা হয়েছে যারা লেখালেখি করতে চায় তাদের টার্গেট করে। তবে আমার মতে ব্লগার সেরা আর্টিকেল নিয়ে কাজ করলে। কারন এখানে প্রতি বছর হোস্টিং রিনিউ করতে হচ্ছে না। আর ওয়ার্ডপ্রেসে তো প্রতি বছর ডোমেইন হোস্টিং রিনিউ করতে হবে। যার জন্য টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে কি কি উপায়ে ইনকাম করা যায়?
এখন আমরা ব্লগিং করে বা ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে কি কি ভাবে টাকা আয় করা যায় বা ব্লগিং করে টাকা আয় করার ৫টি পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
০১. গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়
বর্তমানে বেশিরভাগ ব্লগার গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ব্লগিং করে টাকা আয় করে থাকে। গুগল এডসেন্স একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যেটি বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন তাদের নেটওয়ার্কের সাহায্য প্রচার করে থাকে। গুগল এডসেন্স বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখাই। কিন্তু যেসব ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স তাদের বিজ্ঞাপন দেখাই সেসব ওয়েবসাইট গুলোকে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দেয়। তাই আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার আগে আপনার ওয়েবসাইট অবশ্যই এডসেন্স এপ্রুভ পেতে হবে। এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গুলো ইউনিক এবং এসইও ফ্রেন্ডলি হতে হবে। এডসেন্স এপ্রুভ পেয়ে গেলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনি আয় করতে পারবেন।
০২. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয়
কিছু কমিশনের বিনিময়ে কোন ব্যক্তি বা কোম্পানির পন্য বা সেবা প্রচার করে দেওয়াকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। বর্তমানে ব্লগারদের সবথেকে পছন্দের আয়ের পথ হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। কারন এটি অনেকটা সেফ এবং আয় অনেক বেশি হয়। বর্তমানে অনেক ব্লগার আছে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির ওয়েবসাইটের এফিলিয়েট জোনে আপনাকে সাইনআপ করতে হবে। তারপর প্রতিটি পন্যের বা সেবার জন্য আপনি একটি ইউনিক লিংক পাবেন। সেই লিংকটি আপনার সাইটের মাধ্যমে প্রমোট করতে হবে। যদি উক্ত লিংকের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি ঐ পন্যটি কেনে তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন আপনার একাউন্টে জমা হবে। পরবর্তীতে আপনি সেই কমিশন কোনো ব্যাংক একাউন্ট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে উত্তলোন করতে পারবেন। আর এটাই হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং।
০৩. স্পনসর থেকে টাকা আয়।
নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে অন্যের পন্য বা সেবা প্রচার করে দেওয়াকে স্পনসর বলে। এক্ষেত্রে একটি কোম্পানি সরাসরি একজন ব্লগ এর মালিককে ইমেইল করে এবং তাদের পন্য প্রচার করার জন্য অফার করে থাকে। যদি সেই ব্লগার রাজি হয় তাহলে সেই ব্লগার তার ব্লগের মাধ্যমে উক্ত পন্যটি প্রচার করে। বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের নতুন পন্য কোনো ব্লগার বা ইনফ্লুয়েন্সারকে দিয়ে প্রচার করাই। তবে এক্ষেত্রে বেশিরভাগ কোম্পানি জনপ্রিয় ব্লগকে স্পনসর দিয়ে থাকে। আপনার ব্লগে যদি প্রচুর ভিজিটর থাকে তাহলে স্পনসরের জন্য একটি আলাদা ইমেইল ওয়েবসাইটে উল্লেখ করে দিতে পারেন যার মাধ্যমে কোনো কোম্পানি যেনো সহজেই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
০৪. গেস্ট পোস্ট করে টাকা আয়
যারা নতুন ওয়েবসাইট তৈরী করেছে তাদের ওয়েবসাইটে তাড়াতাড়ি প্রচুর ভিজিটর আনার করার জন্য প্রচুর ব্যাকলিংকের দরকার হয়। তবে এই ব্যাকলিংক যদি কোনো ভালো ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া যায় তাহল এর মান প্রচুর বৃদ্ধি পায়। আপনার ওয়েবসাইটে যদি ভালো পরিমানে ভিজিটর থাকে তাহলে অনেকে আপনার সাইটে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে ব্যাকলিংক চাইবে। এক্ষেত্রে আপনি কিছু টাকা চার্জ করতে পারেন তার কাছ থেকে। যেহেতু আপনার সাইটে অনেক ভিজিটর আছে তাই বেশিরভাগই টাকা দিতে রাজি হবে। আবার অপরদিকে আপনি একটি আর্টিকেল ফ্রিতেই পেয়ে যাবেন।
০৫. অনলাইন শপ
আপনার যদি একটি অনলাইন শপ থাকে তাহলে আপনার পন্য প্রচার করার সবথেকে সেরা মাধ্যম হবে ব্লগিং। এমনকি বড় বড় মার্কেটিং এক্সপার্ট পন্য প্রচার করার পন্থা হিসেবে ব্লগিংকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার পন্যের প্রচার করতে পারবেন। অনেক কোম্পানি আছে যারা ব্লগের মাধ্যমেই সাধারণত পন্য প্রচার করে। তাছাড়া ব্লগিং ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়। যেমন আপনি ভিডিও, ইমেজ, টেক্সট, ব্যানার ইত্যাদি সব ধরনের বিজ্ঞাপন ব্লগের মাধ্যমে প্রচার করতে পারবেন।
শেষ কথাঃ ব্লগিং করে টাকা ইনকাম
একটি ওয়েবসাইট দাঁড় কারনো অনেক কষ্টের এবং সময় সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু একবার একটা ওয়েবসাইট দাঁড় করাতে পারলে আর আপনাকে পিছু ফিরে তাকাতে হবেনা। তাই কষ্ট হলেও ধৈর্য নিয়ে ব্লগিং করতে হবে। আজকের আর্টিকেল এ পর্যন্তই। আশাকরি আপনি ব্লগিং করে টাকা আয় করার ৫ টি পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এরকম আরোও আর্টিকেল পেতে প্রতিনিয়ত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ