যেহেতু উপায় বর্তমানে বাংলাদেশ জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর মধ্যে একটি। সেহেতু উপায় একাউন্টকে আমাদের নিরাপদ রাখা অন্তত জরুরি। বর্তমান সময়ে সহজে টাকা লেনদেন করার জন্য অনেকেই উপায় একাউন্ট ব্যবহার করে থাকে। উপায় ব্যবহারে এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো মেনে না চললে যেকোনো সময় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। সুতরাং আজকের আর্টিকেলে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো আপনার উপায় একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে।
পূর্নাঙ্গ ও সঠিক তথ্য দিয়ে একাউন্ট খুলতে হবে
উপায় একাউন্ট নিরাপদ রাখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সঠিক এবং পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে একাউন্ট তৈরি করতে হবে। কারন যখন আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে একাউন্ট তৈরি করা থাকবে তখন আপনার একাউন্ট চাইলেও কেই অবৈধ ভাবে ব্যবহার করতে পারবেনা। সেই সাথে হটাৎ কোন সমস্যা হলেও আপনার সঠিক তথ্যের মাধ্যমে উপায় একাউন্ট পুনরায় ফেরত নিয়ে আসতে পারবেন এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার টাকা পয়সা কেউ নিতে পারবে না। সুতরাং উপায় একাউন্ট খোলার সময় এই বিষয়টি লক্ষ রেখে একাউন্ট খুলুন
পিন ও ভেরিফিকেশন কোড গোপন রাখা
আপনার উপায় একাউন্টের পিন নাম্বার ও ভেরিফিকেশন কোড সব সময় গোপন রাখবেন। এই পিন বা ভেরিফিকেশন কোডটি কখনো কাউকে বলবেন না। পিন কোড ও ভেরিফিকেশন কোড যদি কেউ জেনে যায় তাহলে আপনার উপায় একাউন্ট থেকে প্রতারকরা অবৈধ টাকা চুরি করে নিতে পারবে । পিন ও ভেরিফিকেশন কোড জানলে আপনার উপায় একাউন্টের টাকা আপনার অজান্তেই নিয়ে নিতে পারে ভিবিন্ন কৌশল ব্যবহার করে। তাই অবশ্যই উপায় একাউন্টের পিন নাম্বার ও ভেরিফিকেশন কোডটি গোপন রাখতে হবে।
উপায়ের লেনদেন সতর্কতা
উপায়ে টাকা লেনদেন করার সময় উপায় একাউন্ট নম্বর, টাকার পরিমাণ, ভেরিফিকেশন কোড, পিন কোড ইত্যাদি দেওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে কোন ধরনের কোন ভুল না হয়। কোন কারণে ভুল নাম্বারে টাকা চলে গেলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারন ভুলে টাকা চলে গেলে সেই টাকা ফেরত পাওয়া যায় না বললেই চলে।
প্রতারকের কল থেকে সাবধান
বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাল হওয়ার সাথে সাথে প্রতারকরাও থেমে নেই। তারাও এখন ডিজিটাল ভাবে প্রতারণা করছে। যদি কোন প্রতারক কল করে বলে আপনার নাম্বারে ৫০০০ টাকা চলে গেছে। প্লিজ টাকাটা তাড়াতাড়ি ফেরত দিন। আপনি কখনো আপনার উপায় একাউন্ট চেক না করে টাকা দিবেন না। কারন বর্তমানে এমন ফেক মেসেজ তৈরি করে পাঠানো যায়। মেসেজ দেখে মনে হবে সত্যি সত্যি উপায় একাউন্টে ৫০০০ টাকা চলে আসছে। এটা আসলে ফেক মেসেজ কিন্তু দেখে বুঝার উপায় নাই। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আগে একাউন্ট চেক করে দেখবেন সত্যি টাকা আসছে কিনা। জিনের বাদশা, টাকা ডাবল পাবেন এমন প্রতারক থেকেও সবসময় সতর্ক থাকবেন।
উপায় একাউন্ট নিরাপদ রাখার আরো কিছু পরামর্শ
১. *২৬৮# কোড ডায়াল করে উপায়ে টাকা লেনদেন করার পর আপনার ফোনে যে এসএমএস আসে, সেটা অবশ্যই চেক করুন। আপনার লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ ঠিক আছে কিনা, সেই তথ্যের সাথে আপনার এসএমএস এর তথ্যের মিল আছে কিনা।
২. আমরা যারা বাটন মোবাইলের মাধ্যমে উপায় একাউন্ট ব্যবহার করি তাদের মোবাইলের জায়গা খুবই কম থাকে। যার ফলে অল্প কিছু মেসেজ আসলেই মোবাইলের জায়গা পূরন হয়ে যায়। যার জন্য নতুন করে কোন মেসেজ আসতে পারেনা। তাই বাটন মোবাইলে উপায় ব্যবহার করলে অবশ্যই অতিরিক্ত মেসেজ ডিলিট করে পর্যাপ্ত জায়গা ফাকা রাখবেন। যাতে আপনার লেনদেনের তথ্য উপায় কনফার্মেশন মেসেজের মাধ্যমে পান। তাহলে মেসেজ চেক করে লেনদেন ঠিক আছে কিনা সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।
৩. উপায় সম্পর্কিত যেকোন ধরনের তথ্য পাওয়ার জন্য উপায় এর হেল্পলাইন নম্বরে বা উপায়ের কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করুন।
৫. যদি কখনো আপনার ফোনে কল আসে যে কিছু টাকার বিনিময়ে উপায় একাউন্টে আপনাকে দ্বিগুণ টাকা দিবে সে ক্ষেত্রে কখনো কান দিবেন না। এই তথ্যটি ঠিক নাকি ভুল তা যাচাইয়ের জন্য উপায় হেল্পলাইন নাম্বারে কল দিয়ে সত্যতা যাচাই করবেন।
৬. আপনার উপায় একাউন্টের পিন নাম্বার কখনোই কাউকে বলবেন না। একটা বিষয় মনে রাখবেন উপায় কখনোই আপনার সিকিউরিটি কোড বা পিন জানতে চাইবে না। তাই এ ব্যাপারটি সব সময় গোপন রাখবেন।
৭. হটাৎ কোন ভাবে যদি আপনার মোবাইল হারিয়ে যায়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব উপায় হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন। তাহলে তারা সাময়িকের জন্য আপনার উপায় একাউন্টটি বন্ধ করে রাখবে। তাতে আপনার আর্থিক ভাবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা কম থাকবে।
শেষ কথাঃ উপায় একাউন্টের নিরাপত্তা পরামর্শ
আপনার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোন কখনো কাউকে দিবেন না। কারন সে যদি আপনার পিন নম্বর জানে তাহলে কিন্তু আপনার একাউন্ট থেকে তার পরিচিত নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে তা উঠিয়ে নিতে পারবে৷ তাই নিজের আপনজন ছাড়া কাউকে মোবাইল দেওয়া উচিত নয়।