Home বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়ে ব্যাবহৃত কিছু যন্ত্রপাতি || যেসব যন্ত্র ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করা হয়

Thumb

রোগ নির্ণয়ে ব্যাবহৃত কিছু যন্ত্রপাতি || যেসব যন্ত্র ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করা হয়

১৯৫০ সালে মানুষের গড আয়ু ছিল ৫০ বছরের কাছাকাছি। বর্তমানে মানুষের জীবন ধারনের মান উন্নত হওয়া, চিকিৎসা সেবার মান উন্নত হওয়া এবং মানুষ নিজে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য মানুষের গড আয়ু বেডে গেছে।
এখন আমরা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি ব্যাবহার করা হয় তার কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করব।

এক্স রে

উইলহেলম রন্টজেন ১৮৮৫ সালে সর্বোচ্চ শক্তি সম্পন্ন এক ধরনের রশ্মি আবিস্কার করেছিলেন। তার আবিস্কৃত এই রশ্মিটি মানুষের শরীরের মাংসপেশি ভেদ করে হাডের ছবি তুলতে সক্ষম। ঐই রশ্মি সম্পর্কে তখন জানা ছিলনা। তাই রশ্মি টির নাম দেওয়া হয় এক্স রে। এই রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য সাধারণ আলোর থেকে কয়েক হাজার গুণ ছোট। আর তাই এই রশ্মিটির শক্তি সাধারণ আলোর থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশি। আগেই বলেছি রশ্মিটির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক ছোট। আর সেজন্যই এক্স রে খালি চোখে দেখা যায়না।

যে কাজ গুলো এক্স রের মাধ্যমে করা যায় তা নিচে দেওয়া হলো

  • হাড় নিজ স্থান থেকে সরে গেলে, হাড় ফাটল ধরলে, হাড় ভেঙে গেলে এটি সহজে তা শনাক্ত করতে পারে।

  • দাতের বিভিন্ন ক্ষয় এবং দাতের ক্যাভিটি বের করার জন্য এই এক্স রে ব্যাবহার করা হয়।

  • কিডনিতে পাথর হয়েছে কিনা তা এটির মাধ্যমে নির্নয় করা হয়।

  • ফুসফুসে ক্যান্সার, নিউমোনিয়া এবং যক্ষা হলে এক্স রে খুব সহজে তা শনাক্ত করতে পারে।

এমআরআই (Magnetic Resonance Imaging)

এমআরআই– MRI এর পূর্ণরূপ হচ্ছে (Magnetic Resonance Imaging)। আমরা জানি প্রত্যেকটি মানুষের দেহের প্রায় ৭০ ভাগ পানি। এর অর্থ হলো মানুষের প্রায় প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গেই পানি রয়েছে। আপনারা হয়তো সিটি স্ক্যান যন্ত্র দেখেছেন। এমআরআই যন্ত্রটিকে দেখতে সিটি স্ক্যান যন্ত্রের মতোই। কিন্তু এটি সম্পুর্ণ ভিন্ন ধরনের কাজ করে। সিটি স্ক্যান যন্ত্রে এক্স রে পাঠিয়ে প্রতিচ্ছবি নেওয়া হয়। কিন্তু এমআরআই যন্ত্রটির কাজ আরও কঠিন। এই যন্ত্রটিতে একজন রোগীকে অনেক শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রে রেখে তার শরীরে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ দেওয়া হয়। আরেকটি কথা সিটি স্ক্যান দিয়ে যা কিছু করা সম্ভব, এমআরআই দিয়েও সেই কাজ গুলো করা সম্ভব।

এন্ডোসকপি

মানবদেহে মাঝে মাঝে ক্ষতস্থানের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষত স্থানটিকে সরাসরি দেখার জন্য এন্ডোসকপি করা হয়।

এন্ডোসকপি করার জন্য বিশেষজ্ঞরা দুটি স্বচ্ছ নল ব্যাবহার করেন। যেই অংশের এন্ডোসকপি করা হবে প্রথমে সেই অংশে একটি স্বচ্ছ নল দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে আলো ফেলা হয়। তারপর দ্বিতীয় স্বচ্ছ নল দ্বারা সেই এলাকার ছবি তোলা হয়। আমরা সবাই জানি যে শরীরের ভিতরে কোনো অংশ ভালো করে দেখা খুব কঠিন একটি কাজ। আর এই কঠিন কাজটি করার জন্য পাঁচ থেকে দশ হাজার অপটিক্যাল ফাইবারের একটি বান্ডিল ব্যাবহার করা হয়। আমরা জানি অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু। আর তাই পাঁচ থেকে দশ হাজার বান্ডিলের জন্য প্রস্থচ্ছেদ কয়েক মিলিমিটারের বেশি হয়না।

এন্ডোসকপি সব অংশে করা যায়না।এন্ডোসকপি সাধারণত ফাপা অংশে করা হয়। যে যে জায়গায় এন্ডোসকপি করা যায় তা নিচে দেওয়া হলোঃ-

  1. নাসা গহ্বর, নাকের চারপাশের সাইনাস এবং কান।
  2. মুত্রনালীর অভ্যান্তরীন ভাগ।
  3. স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ।
  4. উদর এবং পেনভিস।
  5. পাকস্থলী,ক্ষুদ্রান্ত,বৃহদান্ত্র বা কোলন।
  6. ফুসফুস এবং বুকের কেন্দ্রীয় বিভাজন অংশ।

শেষ কথা

আজকে আমরা জানলাম যেসব যন্ত্রপাতি বা যেসব মেশিন ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করা হয় তা সম্পর্কে। যদি রোগ নির্ণয় এর যন্ত্রপাতি সম্পর্কে আপনার বন্ধুদের জানাতে চান তাহলে শেয়ার করুন।