বাংলাদেশ অনেক ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। এখানে নানা ধরনের নানা পেশার মানুষ বসবাস করে। সংবাদপত্র খুললেই যে বিষয়টি নজরে আসে তা হল সড়ক দুর্ঘটনা। মানুষের অনেক জীবন চলে যাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার ফলে। অনেকের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেখা গেছে বাংলাদেশের প্রায়ই সকাল থেকেই সন্ধ্যা পর্যন্ত সকলে কর্মব্যস্ততায় থাকে। ফলে বাইরে যেতে হয় কিন্তু রাস্তাঘাট ভালো না হওয়ার কারণে তারা কর্মস্থলে ঠিকমতো পৌঁছাতে পারে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে রাস্তায় অনেক ভিড় হওয়ার কারণে সেখানে যানজট দেখা দেয়। এবং নানা ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে শুধু একটা জীবন নয়, তার সাথে একটা পরিবারও নষ্ট হয়ে যায়। কেননা যে ছিল একটি পরিবারের আশা, বেঁচে থাকার অবলম্বন, একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, সে যদি কোনো কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, তবে তার পরিবারের মানুষের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। তাদের ভরণপোষণের সমস্যা দেখা দিবে।
বর্তমান বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা একটি অন্যতম সবথেকে বড় সমস্যা। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে অনেক ধরনের বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা মূলত একটি সমস্যা। কেননা ড্রাইভার বা নাগরিকগণ সচেতন না হওয়ার কারণে এটি দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে অনেক দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে এমন একটি সমস্যা যা মূলত সব রাষ্ট্রেই হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে এর পরিমাণ অনেক বেশি। বিশ্বের অন্যতম উন্নয়নশীল দেশ হলো বাংলাদেশ। দেখা গেছে এখানে মানুষের কর্ম ব্যস্ততা অনেক বেশি। সকাল থেকে শুরু হয় তাদের কর্ম ব্যস্থতা। কেউ সকালে বেরিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সন্ধ্যায়ও তারা বাড়ি তে আসতে পারেনা। হয়তো তাদের বাড়িতে আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে মানুষের প্রাণ চলে যায়। সড়ক দুর্ঘটনা হলো এমন এক ধরনের ঘটনা সমস্যা যা গ্রামাঞ্চল এমনকি বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে হয়ে থাকে। তবে শহরে এর পরিমাণ খুবই বেশি।বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এর পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে এবং তার ফলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । যদি নাগরিক সচেতন না হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কখনো, কোনদিনও কমবে না। সড়ক দুর্ঘটনা দিনে দিনে বাড়তেই থাকবে। তাই সকলের সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতন থাকা খুব দরকার। তাহলেই সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কমতে থাকবে।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ
মূলত বিভিন্ন কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশের একটি সব থেকে বড় সমস্যা। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা মূলত মানুষের জীবন নয়, এটি একটা পরিবারকে পথে বসিয়ে দেয়। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন না। স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা তারা সময় মতো স্কুলে বা কলেজে পৌঁছাতে পারছেন না। দেখা গেছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা শিকার হন। এতে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। সড়ক দুর্ঘটনা মূলত একটি সামাজিক সমস্যা। এর ফলে সমাজ কখনোই উন্নতির পথে যেতে পারবে না । কেবল সমাজ নয়, বরং এর ফলে দেশের নানা রকমের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির ফলে সাধারণত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তবে তবে নানা ধরনের সমস্যার জন্য সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। নিচে কিছু সড়ক দুর্ঘটনা কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
২. অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে একটি। তবে এদেশে অনেক জনসংখ্যা রয়েছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার ফলে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। দেখা গেছে জনসংখ্যার তুলনায় যানবাহনের পরিমাণ কম। যার ফলে অধিক জনসংখ্যা যানবাহনে উঠে থাকে। মূলত সেখানে কেউ উঠতে গিয়েও নানারকম এক্সিডেন্ট এর শিকার হয়। আবার দেখা গেছে যে, অনেকেই রাস্তা পারাপার হতে গিয়েও সড়ক দুর্ঘটনা স্বীকার হয়েছেন। এখানে আসল কথা হলো অধিক জনসংখ্যার চাপ। যদি চাপ কম থাকতো তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা হতো না। মূলত নানারকম যানবাহন রয়েছে। প্রায় সব যানবাহন দিয়েই এখন ছোট-বড় অনেক রকমের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এখন পত্রিকাতে প্রায় প্রতিনিয়তই সড়ক দুর্ঘটনা নিউজ শোনা যায়। যার অধিকাংশই হচ্ছে মৃত্যু। অপরদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে আরো নানারকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদি জনসংখ্যা কম থাকতো তাহলে যানবাহন বা রাস্তার উপর চাপ কম থাকতো। এতে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কমে যেত। তাই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে অধিক জনসংখ্যা কে দায়ী করা যেতে পারে।
২. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন
বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে অধিকাংশ চালকদের ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রয়েছে। যা তারা ঠিকমতো মেরামত করে না সেসব যানবাহন দিয়ে গাড়ি চালান। ফলে তারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। আবার অনেক দেখা গেছে যে বেশিরভাগ যানবাহনেরই কোন লাইসেন্স থাকে না। অর্থাৎ বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ কর্তৃক তাদের কোন অনুমতি নেই। তারা অসাধু উপায়ে লাইসেন্স তৈরি করে রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছেন। আবার দেখা গেছে নানা ধরনের যানবাহন পুরাতন এবং ভাঙ্গা হওয়ার কারণেও নানা ধরনের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
৩. অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট
আমাদের দেশের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট গুলো অপরিকল্পিত অবস্থায় রয়েছে। এখানে রাস্তাঘাটের কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন নেই। এখানে যানবাহন চলার কোনো সুব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন যানবাহনের আকার অনুযায়ী এখানে রাস্তাঘাটের কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এখানে অধিকাংশ পথচারীর রাস্তা পারাপার হওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কোন ফুটপাথ নেই। ফলে সেখানে যানবাহন চলাচলের জন্য তা উপযুক্ত নয়।
৪.ট্রাফিক আইনের দায়িত্বহীনতা
মূলত আমাদের দেশের সড়কের মধ্যে ট্রাফিক রুলস বা আইন রয়েছে। কিন্তু এখানে ট্রাফিক আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানা রকম দুর্নীতির কথা উঠে এসেছে। যিনি দায়িত্বে রয়েছে সে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে এবং ঠিকমতো গাড়ির লাইসেন্স চেক করে না এতে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। মূলত এটাও এক ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের ট্রাফিক আইনের প্রয়োগহীনতার জন্য সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তারা তাদের দায়িত্বে অনেক অবহেলা করে। এবং অসাধু চালকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয় না।
৫. ট্রাফিক আইন ভঙ্গ
অনেকে ট্রাফিক আইন লংঘন করে থাকে। দেখা গেছে অনেক ড্রাইভার ট্রাফিক আইনকে কোন ভয় করে না। তারা খুব দ্রুত গাড়ি চালায় এবং রাস্তাঘাটে কোনো খেয়াল করে না। তারা রোড সাইন, গতিসীমা, ইত্যাদি কোন রুলস খেয়াল করে না। ফলে তাদের এরকম বেখেয়ালিপনার জন্য অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
৬. অদক্ষ চালনা
বাংলাদেশে অধিকাংশ চালকের কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তারা মূলত কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। তারা কোন প্রশিক্ষণ নেয় না বরং দুর্নীতির পথ বেছে নিয়ে তারা ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে রাতারাতি চালক হয়ে উঠে। এবং তাদের দ্বারা সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যারা দুর্নীতির মাধ্যমে চালক হয়ে ওঠে মূলত তাদের ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে নূন্যতম ধারণাও নেই। তারা রাস্তার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত। যখন গাড়ি চালায় তখন তারা আশেপাশে বা সামনে পিছনে কোন কিছু খেয়াল না করেই তারা তাদের মত গাড়ি চালিয়ে যায়। এতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে অনেকে নেশা করে থাকে। নেশাগ্রস্ত থাকার ফলে তাদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ফলে তাদের দ্বারা নানারকম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ওভার টেকিং করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে দেখা গেছে। আমাদের দেশের অনেক ড্রাইভারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব চলে আসে। রাস্তার মধ্যে যখন একটি যানবাহন অন্য জনের সামনে চলে যায় তখন অন্য ড্রাইভার এর মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব চলে আসে এবং তারা ওভার টেকিং এ জড়িয়ে পড়ে। এতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকার
সড়ক দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক সমস্যা। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে অনেকের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মূলত এটা মানুষেরই সমস্যা কেননা তাদের সচেতনহীনতার কারণে এ সমস্যাটা হয়। নিচে এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
১. ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগকরণ
সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এ দায়িত্বে রয়েছেন তাদের অবশ্যই এই আইন সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে হবে। যদি তারা এ আইনকে সুষ্ঠুভাবে পালন করতে না পারেন তবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এবং যারা এই আইন লঙ্ঘন করে তাদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আর সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না।
২. ট্রাফিক আইন বিভাগকে দুর্নীতিমুক্তকরন
দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা একটি ভয়ানক আকার ধারণ করছে। মূলত এটি অনেক কারণেই হয়ে থাকে। তবে যদি ট্রাফিক আইন বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত করা হয় তাহলে এর পরিমাণ দিনে দিনে কমতে থাকবে। দেখা গেছে অনেক দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিরা দুর্নীতি করে থাকে। যদি তারা দুর্নীতি না করে তাহলে এই সমস্যা আর দেখা যাবে না। তাই সবার উচিত ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং যে বা যারা ট্রাফিক আইন বিভাগে দায়িত্বরত অবস্থায় রয়েছেন তারা যেন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে। তবে দেশে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ কমবে।
৩. চালকদের প্রশিক্ষণ প্রদান
যারা যানবাহন চালান তাদেরকে অবশ্যই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কেননা তারা যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হয় তাহলে তারা ট্রাফিক আইন বা কিভাবে গাড়ি চালালে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না তা সম্পর্কে তারা জানবে না। তাই সকল চালকদেরকেই অবশ্যই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাহলে তাদের সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান থাকবে।
৪. রাস্তাঘাটের সংস্কার সাধন
দেখা গেছে বাংলাদেশের অনেক রাস্তাঘাট ভাঙ্গা এতে যানবাহন চলাচলের জন্য উপযুক্ত নয়। ভাঙ্গা রাস্তাঘাটের জন্যই মূলত অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। যদি সরকার সেসব গুলোকে সঠিকভাবে সংস্কার করে থাকে তাহলে সেখানে আর সড়ক দুর্ঘটনা হবে না। রাস্তাঘাট ঠিকমত মেরামত করতে হবে এবং পাশাপাশি পথচারীদের জন্য ফুটপাত রাখতে হবে। যাতে তারা ফুটপাত দিয়েই পারাপার হতে পারে। যদি ফুটপাত না থাকে তাহলে তারা রাস্তা পার হতে গিয়ে অনেকেই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন । এতে অনেকের জীবন পর্যন্ত চলে যায়। তাই রাস্তার সংস্কার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৫. জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি
সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি জনগণ সচেতন থাকে তাহলে কখনোই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না। জনগণ যদি সচেতন না থাকে তাহলে তারা হেয়ালীপনা করে রাস্তা চলাচল করবে। জনগণকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বুঝাতে হবে। কিভাবে রাস্তা চলাচল করতে হবে, কিভাবে রাস্তা চলাচল করলে দুর্ঘটনা হবে না, সেসব সম্পর্কে তাদের কে বোঝাতে হবে। যদি তারা তারা মেনে চলে তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না।