Home সমকালীন তথ্য কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

Thumb

কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

পরিবেশ দূষণের জন্য কেনো আমরাই দায়ী? আজকের পোস্টে সেই বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো পরিবেশ দূষণের জন্য আমরা কিভাবে দায়ী হলাম। আমাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহটিতে অসংখ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বসবাস। তবে মানুষ হচ্ছে সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের উচিত তার আশে পাশের পরিবেশ সুন্দর রাখা। কিন্তু তারা বিপরীত কাজ করছে। অর্থাৎ পরিবেশ আরও দূষণ করছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশ শুরু হয়েছে পরিবেশের উন্নয়ন দিয়ে। সভ্যতার বিবর্তনের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ মানুষ কর্তৃক পরিবর্তিত পরিবেশ। নিজের শ্রম ও সাধনা দিয়ে হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ তার পরিবেশ নির্মাণ করে চলেছে। আবার অতি সামান্য কারনে সেটা বিনষ্ট করছে।

শুধুমাত্র মানুষ নয় উদ্ভিদ এবং অন্যান্য প্রাণীরাও পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। কোনো কারনে যদি পরিবেশ নষ্ট হয় তাহলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই বর্তমান জীবনে পরিবেশ দূষণ একটি বড় সমস্যা। পরিবেশ দূষণের কারন হচ্ছে মানুুষের নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতা। মানুষ নিজের সামান্য সুবিধার জন্য পরিবেশ দূষণ করছে। শুধুমাত্র নিজের জন্য সকলের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। প্রত্যেক উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বেচে থাকার জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া রয়ছে। কোনো কারনে যদি সেই প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পরিবেশ দূষণ ঘটে। সাধারনত বিভিন্ন কারনে পরিবেশ দূষন ঘটে। যেমনঃ মাটি দূষণ, পানি দূষণ, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। পরিবেশ দূষণে উপরোক্ত কারন গুলো কেন দায়ী এখন আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করব।

মাটি দূষণঃ কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

বর্তমানে ফসল চাষ করার জন্য জমিতে সার ও কীটনাশক ব্যাবহার করছি। মাটিতে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলছি। কীটনাশক এবং বর্জ্য প্রতিনিয়ত মাটি দূষণ করছে। তাছাড়াও মাটি দূষণের আরও বিভিন্ন কারন রয়েছে।

পানি দূষণঃ কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

মানব সভ্যতার জন্য সবচেয় বড় অভিশাপ হলো পানি দূষণ। পৃথিবীর অধিকাংশ  জলাধারের অবস্থাই এখন খারাপ। সাগর বা নদী দূষণের অন্যতম প্রধান কারন হলো বর্জ্য পদার্থ। নদীর তীরে গড়ে ওঠা কলকারখানার বর্জ্য আবর্জনা ফেলা হয় নদীতে ফলে পানি দূষিত হয়। আমরা চাইলে কলকারখানার বর্জ নদীতে না ফেলে নিদ্রিষ্ট স্থানে ফেলে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো। আমাদের ভুলের জন্য পরিবার দূষন হচ্ছে। তাই পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী।

বায়ু দূষণঃ কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অন্যতম প্রধান কারন হলো বায়ু দূষণ। আমরা জানি প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে সর্ব প্রথম স্থান হলো বায়ুর। কারন আমাদের বেচে থাকার প্রধান উৎস হলো অক্সিজেন। যা আমরা বায়ু থেকে পাই। ইটের ভাটার ধোয়া এবং যানবাহনের কালো ধোয়ার জন্য বায়ু দূষিত হয়। এভাবে যদি বায়ু দূষিত হয় তাহলে মানব জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

শব্দ দূষণঃ কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

আধুনিক নাগরিক জীবনে শব্দ দূষণ একটি ভয়াবহ সমস্যা। যানবাহনের অসহ্য শব্দ,  কলকারখানার শব্দ, নির্মান কাজের শব্দ, মাইকের শব্দ, লাইড় স্পিকারেরর চিৎকার ইত্যাদি শব্দ দূষণের প্রধান কারন। শব্দ দূষণ রোধ করার বিষয় নিয়েও নিচে আলোচনা করা হবে।

গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়াঃ কেন পরিবেশ দূষণের জন্য আমরাই দায়ী?

গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়াকে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে জমানো বরফ গলে অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে ড়ুবে যাবে। এই আতংকে সবাই তটস্ত।

পরিবেশ দূষণের প্রতিকার || পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা দেখে এর প্রতিকারের নানা উপায় ভাবা হচ্ছে।

  1. পলথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করন।
  2. পরিকল্পিত নগরায়ন।
  3. আবাসস্থলে শিল্প কারখানা না করা।
  4. পরিকল্পিত বনায়ন।
  5. মেয়াদ উত্তীর্ণ যান বাহন নিষিদ্ধ করন।
  6. বর্জ্য দ্রব্যের সঠিক ও নিরাপদ অপসারণ।
  7. সার ও কীটনাশকের ব্যাবহার কমানো।
  8. পরিবেশ আদালত গঠন।
  9. পরিবেশ সম্পর্কে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা

শেষ কথা

সর্বোপরি ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে গনসচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। সুস্থ ভাবে বাচতে হলে সুন্দর পরিবেশ চাই। কোনো কারনে পরিবেশ দূষিত হলে জীবনের সকল ক্ষেত্রে তার বিরুপ প্রতিক্রিয়া ঘটে। এই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ভাবে চিন্ত ভাবনা চলছে। সুস্থ পরিবেশে থাকতে হলে সবাইকে বলতে হবেঃ- “চলে যাব তবু যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জন্জাল- এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি”।